মাদকাসক্ত ব্যক্তির মাদকের প্রতি তীব্ৰ টান বারে বারে এমন কি চিকিৎসার পরেও আসতে পারে। কিন্তু প্রচলিত ডিটোক্সিফিকেশন এর চিকিৎসায় টান প্রতিরোধের কৌশল রপ্ত করানো হয় না, ফলে চিকিৎসার পরেও ব্যক্তি মাদকের তীব্র টান থামাতে না পেরে আবার মাদক নেয়া শুরু করে। নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসায় মাদকের প্রতি তীব্র টান ও পুনরায় মাদক নেয়া থেকে বিরত রাখার কৌশল শেখানো হয়।মাদক গ্রহণের ফলে তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে (কর্ম, শিক্ষা, পরিবার, সমাজ) ক্ষতি করছে। শুধুমাত্র মেডিকেল ডিটোক্সিফিকেশন চিকিৎসায় তা কোনো ভাবেই পূরণ হওয়ার সম্ভব নয়। নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসায় বিভিন্ন বিজ্ঞান সম্মত থেরাপি এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে এইসব ক্ষতি কাটিয়ে ব্যক্তিকে ভারসাম্যপূর্ণ জীবনে ফিরিয়ে আনতে নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসা কোনো বিকল্প নেই।
আমরা বিশ্বাস করি, মাদকাসক্তি একটি রোগ, যা আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য ও একমত প্রকাশ করে।তারা আরও মনে করেন যে, এ রোগ সহজেই সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি, আসক্তিজনিত অসুস্থ ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্বিক উন্নতির উপর তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নির্ভর করে। শুধু মাদক থেকে বিরত থাকা নয়, ভবিষ্যতে সে যেন মাদকের কাছে ফিরে না যায় সে পথ তৈরি করে দেয়াই আমাদের দায়িত্ব।
আমরা আরও বিশ্বাস করি, একজন আসক্ত ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময় আটকে রেখে, নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ খাইয়ে বা তার মতের বিরুদ্ধে কাজ করিয়ে কখনোই থাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না । তার দরকার সঠিক সময়ে সঠিক কাউন্সেলিং, বন্ধু সুলভ আচরণ, আস্থা ও বিশ্বস্ততা। এর ফলে তার বিগত জীবনের কেস স্ট্যাডির মাধ্যমে সমস্যা খুঁজে বের করে তাকে দিয়ে তার মতো করে সমস্যা গুলোর প্রতিরোধ বা সমাধান করা হয়।একেকজন আসক্ত ব্যক্তি একেক ধরণের ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকে। কারণ তাদের পারিবারিক, শিক্ষাগত ও আর্থসামাজিক অবস্থা এক নয়।তাই প্রত্যেকের জন্য আমরা স্বতন্ত চিকিৎসা পদ্ধতি পরিকল্পনা করে থাকি।
একজন আসক্ত ব্যক্তি তার আসক্তির কারণে তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে(কর্ম, শিক্ষা, পরিবার, সমাজ) ক্ষতি করেছে।সে ব্যক্তি যখন চিকিৎসা কেন্দ্রে আসে তখন সে তার ঐ সমস্যাগুলো বাইরে রেখে আসে।যখন সে ফিরে যায়, ঐ সমস্যাগুলো আবার তাকে আঁকড়ে ধরে। যার কারণে তার সুস্থ থাকা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণেই আমরা চিকিৎসার ২য় পর্ব শুরু করি যখন সে ঘরে ফিরে যায়।